জীবনানন্দ দাশের ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ফাইল ফটো

 

রূপসী বাংলার কবি জীবনাননন্দ দাশের ৬৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৫৪ সালের আজকের দিনে কলকাতার বালিগঞ্জে শম্ভূনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে দুর্ঘটনা পরবর্তী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর ৮ দিন আগে ১৪ অক্টোবর বালিগঞ্জে এক ট্রাম দুর্ঘটনায় জীবনাননন্দ দাশ আহত হন। ট্রামের ক্যাচারে আটকে তার শরীর দলিত হয়ে ভেঙে যায় কণ্ঠ, ঊরু এবং পাঁজরের হাড়।

কলকাতায় মৃত্যু হলেও যুগস্রষ্টা এই মহান কবির আদি নিবাস বাংলাদেশের বরিশালে। যদিও কবির পূর্বপুরুষগণ ঢাকা জেলার তৎকালীন বিক্রমপুর পরগণার কুমারভোগের গাওপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। গ্রামটি পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। ১৮৮৩ সালের দিকে বিক্রমপুর থেকে বরিশালে চলে আসে দাশ পরিবার।

 

পরিবারটি জন্মসূত্রে, হিন্দু হলেও পরবর্তীতে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা লাভ করেন। বরিশালে ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের অন্যতম ভূমিকা ছিল এই পরিবারের। জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষক, প্রাবন্ধিক, বরিশাল ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক এবং ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক। এছাড়া তার মা কুসুমকুমারী দাশের কবিতা আদর্শ ছেলে (আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/কথায় না বড় হয়ে কাজে বড়ো হবে) আজও শ্রেণিপাঠ্য। কবিতাটিকে জাতি গঠনের মানদণ্ড বিবেচনা করা হয়। জীবনানন্দকে ডাকা হতো মিলু নামে।

 

জীবদ্দশায় প্রচণ্ড অর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে গেছে কবি। কবিতা লেখার জন্য চাকরি চলে গেছে অধ্যাপনার। বরিশাল, বাগেরহাট, কলকাতায় করেছেন জীবিকার অন্বেষণ। তবে তার মৃত্যুর পরে আলোচনায় উঠে আসে অমর লেখনি। জীবনানন্দ দাশের কবিতা মহান মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে। তিরিশের দশকের এই কবি একবিংশ শতাব্দীর এই দ্বিতীয় দশকেও সবচেয়ে বেশি চর্চিত হচ্ছেন।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের আগে সপরিবারে বাংলাদেশ ছেড়ে স্থায়ীভাবে কলকাতায় চলে যান। যাওয়ার আগে তিনি বা তার পরিবার এক একরের বেশি জমির বাড়িটি অবিক্রিত রেখে যান। পরবর্তীতে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে বাড়িটি বিক্রি দেখানো হয়েছে। তবে জীবনানন্দ দাশের বাড়িটি পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কবিপ্রেমী ও সংস্কৃতিকর্মীরা।

বরিশালে যত আয়োজন

কবির স্মরণে রোববার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় জীবনানন্দ দাশ সড়কের জীবনানন্দ মিলনায়তন ও পাঠাগারে জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবিতা পাঠ, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রগতি লেখক সংঘ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন থাকবে।

 

বিকেল সাড়ে ৫টায় আলোচনা সভা, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমন্বয়ক জাহিদ আব্দুল্লাহ রাহাত। এছাড়া সাংস্কৃতিক সংগঠন উত্তরণের আয়োজনে কবি চত্বরে মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচি রয়েছে।  সূএ:ঢাকা পোস্ট  ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ডিবির মশিউর সাময়িক বরখাস্ত

» মোটরসাইকেলে চালকসহ দুইজনের বেশি বহন না করার নির্দেশ

» ইসলামী শাসনব্যবস্থা ছাড়া বৈষম্য দূর হবে না : মামুনুল হক

» নির্বাচনের দিনক্ষণ জানতে বিদেশি অংশীজনরা অপেক্ষা করছে : খসরু

» বিস্ফোরক মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান

» তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি

» রাশিয়ার নতুন ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চলবে: পুতিন

» গুজব প্রতিরোধে সহায়তা চায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

» পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত

» এআই নিয়ে কাজ করবে গ্রামীণফোন ও এরিকসন

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জীবনানন্দ দাশের ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ফাইল ফটো

 

রূপসী বাংলার কবি জীবনাননন্দ দাশের ৬৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৫৪ সালের আজকের দিনে কলকাতার বালিগঞ্জে শম্ভূনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে দুর্ঘটনা পরবর্তী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর ৮ দিন আগে ১৪ অক্টোবর বালিগঞ্জে এক ট্রাম দুর্ঘটনায় জীবনাননন্দ দাশ আহত হন। ট্রামের ক্যাচারে আটকে তার শরীর দলিত হয়ে ভেঙে যায় কণ্ঠ, ঊরু এবং পাঁজরের হাড়।

কলকাতায় মৃত্যু হলেও যুগস্রষ্টা এই মহান কবির আদি নিবাস বাংলাদেশের বরিশালে। যদিও কবির পূর্বপুরুষগণ ঢাকা জেলার তৎকালীন বিক্রমপুর পরগণার কুমারভোগের গাওপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। গ্রামটি পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। ১৮৮৩ সালের দিকে বিক্রমপুর থেকে বরিশালে চলে আসে দাশ পরিবার।

 

পরিবারটি জন্মসূত্রে, হিন্দু হলেও পরবর্তীতে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা লাভ করেন। বরিশালে ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের অন্যতম ভূমিকা ছিল এই পরিবারের। জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষক, প্রাবন্ধিক, বরিশাল ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক এবং ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক। এছাড়া তার মা কুসুমকুমারী দাশের কবিতা আদর্শ ছেলে (আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/কথায় না বড় হয়ে কাজে বড়ো হবে) আজও শ্রেণিপাঠ্য। কবিতাটিকে জাতি গঠনের মানদণ্ড বিবেচনা করা হয়। জীবনানন্দকে ডাকা হতো মিলু নামে।

 

জীবদ্দশায় প্রচণ্ড অর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে গেছে কবি। কবিতা লেখার জন্য চাকরি চলে গেছে অধ্যাপনার। বরিশাল, বাগেরহাট, কলকাতায় করেছেন জীবিকার অন্বেষণ। তবে তার মৃত্যুর পরে আলোচনায় উঠে আসে অমর লেখনি। জীবনানন্দ দাশের কবিতা মহান মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে। তিরিশের দশকের এই কবি একবিংশ শতাব্দীর এই দ্বিতীয় দশকেও সবচেয়ে বেশি চর্চিত হচ্ছেন।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের আগে সপরিবারে বাংলাদেশ ছেড়ে স্থায়ীভাবে কলকাতায় চলে যান। যাওয়ার আগে তিনি বা তার পরিবার এক একরের বেশি জমির বাড়িটি অবিক্রিত রেখে যান। পরবর্তীতে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে বাড়িটি বিক্রি দেখানো হয়েছে। তবে জীবনানন্দ দাশের বাড়িটি পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কবিপ্রেমী ও সংস্কৃতিকর্মীরা।

বরিশালে যত আয়োজন

কবির স্মরণে রোববার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় জীবনানন্দ দাশ সড়কের জীবনানন্দ মিলনায়তন ও পাঠাগারে জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবিতা পাঠ, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রগতি লেখক সংঘ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন থাকবে।

 

বিকেল সাড়ে ৫টায় আলোচনা সভা, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমন্বয়ক জাহিদ আব্দুল্লাহ রাহাত। এছাড়া সাংস্কৃতিক সংগঠন উত্তরণের আয়োজনে কবি চত্বরে মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচি রয়েছে।  সূএ:ঢাকা পোস্ট  ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com